-->

কিভাবে মনিটাইজ পাবেন? কি করলে মনিটাইজ পাবেননা, মনিটাইজ পাওয়ার পর কি কি করবেন?



মনেটাইজ কিভাবে পাবেন?

আমরা ইতোমধ্যেই জেনেছি যে, ইউটিউব থেকে ইনকামের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে মনেটাইজ। ইউটিউবে মনেটাইজ পাওয়ার জন্য কিছু কন্ডিশন পুরণ করতে হয়, সেটি হলো ১ বছরের মধ্যে ১হাজার সাবস্ক্রাইবার এবং ৪হাজার ঘন্টা ওয়াচটাইম।
এই কন্ডিশন লাস্ট ১ বছরের মধ্যে পূরণ হতে হবে। এখন এই বিষয়টিই অনেকেই বুঝতে পারেনা। লাস্ট ১বছর এইটা মানে কি? অনেকেই ভাবে, চ্যানেল খোলার ১বছরের মধ্যে না পূরণ হলে হয়তো আর মনেটাইজ পাবেনা কিন্তু এটি একটি ভুল ধারণা।
ধরুন আপনি চ্যানেল খুলেছেন ৫ বছর আগে কিন্তু আপনি এতদিন কাজ করেননি, তাহলে কি আপনি মনেটাইজ পাবেননা? অবশ্যই পাবেন।
তবে আজ থেকে পূর্বের ১বছরের মধ্যে আপনার এই কন্ডিশন পুরণ করতে হবে। মানে সামনের দিকে একদিন করে আগাবে ও পিছনের একদিন কমে যাবে।
আজ থেকে ১বছর ১দিন আগেরটা কাউন্ট হবেনা এর আগে যেগুলোই হবে সেগুলো আপনার চ্যানেলে থেকেই যাবে কিন্তু আপনি যেদিন মনেটাইজ অন করতে যাবেন তার পূর্বের ১বছরের মধ্যে ১হাজার সাবস্ক্রাইব এবং ৪হাজার ঘন্টা ওয়াচটাইম থাকতে    হবে। এখানে কিন্তু ৪হাজার মিনিট নয়, ২লক্ষ ৪০ হাজার মিনিট। এতো সময় ধরে আপনার ভিডিওগুলি মানুষদের দেখতে হবে। এরপর আপনি Youtube Studio তে গিয়ে মনেটাইজ অপশন থেকে মনেটাইজ ইনেবল করতে পারেন। এজন্য ইউটিউবে সার্চ দিয়ে এ সম্পর্কে ভিডিও দেখে নিবেন।

এই কন্ডিশনের বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করার কোন প্রয়োজন নেই, কারণ পরবর্তীতে এই কন্ডিশন আপনার কাছে কিছুই মনে হবেনা, এখন নতুন জন্য এমনটি মনে হওয়াই স্বাভাবিক।
তবে কিছু কিছু কারনে কিন্তু মনেটাইজ পাবেননা। এ সম্পর্কে পরবর্তী পার্টে বিস্তারিত আলোচনা করবো।


কি কি করলে মনেটাইজ পাবেননা? 

সবাই সাধারণত ২ পয়সা ইনকামের জন্যই ইউটিউবে আসে। এখন যদি কিছু ভুলের কারণে সেই ইনকামের পথটিই বন্ধ হয়ে যায় তাহলে তা খুবই কষ্টকর। তাই এখন আপনাদের জানাবো কি কি করলে আপনি মনেটাইজ পাবেননা।
* কপিরাইট ভিডিও তৈরি করলেঃ-
অনেকেই কপিরাইট কন্টেন্ট নিয়ে কাজ করে কিন্তু কপিরাইট কন্টেন্ট নিয়ে কাজ করলে আপনার মনেটাইজ পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। যদিও কেউ কেউ পেয়ে যায় তবে অধিকাংশই কপিরাইট কন্টেন্টে মনেটাইজ পাবেননা। তাই কপিরাইট কন্টেন্ট নিয়ে কাজ করার চিন্তা বাদ দিয়ে নিজে কিছু করার চেষ্টা করুন।
* টিকটক ভিডিওতে কখনওই মনেটাইজ পাবেননাঃ-
টিকটক ভিডিও খুব তারাতারি ভাইরাল হয় ভেবে আপনি যদি এগুলো দিয়ে ইউটিউবিং করতে চান তাহলে আপনি ভুল করছেন। কারণ টিকটক রিলেটেড ভিডিওতে ইউটিউব কখনওই মনেটাইজ দিবেনা।
* স্লাইড শো ভিডিওতে মনেটাইজ পাবেননাঃ-
অনেকেই রয়েছে যারা শুধুমাত্র স্লাইড শো এবং কিছু টেক্সট ভিডিওতে দিয়ে একটি ব্যাকগ্রাউন্ডে মিউজিক দিয়ে আপলোড করে, এমন ভিডিওতে আপনি মনেটাইজ পাবেননা। তবে আপনি এর সাথে যদি ভয়েজ দেন তাহলে কিছুটা সম্ভাবনা রয়েছে।
* কোন শিক্ষামূলক ছাড়া অযথা কোন ভিডিও তৈরি করে আপলোড দিলেও আপনি কখনওই মনেটাইজ পাবেননা।
* বিভিন্ন ছোট ছোট ভিডিও যেমন ২০-৩০ সেকেন্ড করে আপলোড দিলে সেগুলোতেও আপনি মনেটাইজ পাবেননা।
* কখনওই ইউটিউবে স্প্যামিং করবেননা।
* রিইউজড ভিডিও থাকলে মনেটাইজ পাবেননা।
এই বিষয়গুলি এভোয়েড করে সুন্দর সুন্দর ভিডিও আপলোড করুন তাহলে নিশ্চয়ই মনেটাইজ পাবেন।


মনেটাইজ পাওয়ার পর যা যা করতে হবে।

কথায় আছে, স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন।
ঠিক তেমনি মনেটাইজ পাওয়ার চেয়ে মনেটাইজ রক্ষা করা একটু কঠিন।
মনেটাইজ পাওয়ার পর আপনাকে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে, তা নিম্নে আলোচনা করা হলোঃ-
* মনেটাইজ পাওয়ার পর সাধারণত যে যে কারণে ডিজেবল হয় তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ভিডিওতে কম ভিউসঃ- ধরুন আপনি নতুন মনেটাইজ পেলেন, এখন আপনার চ্যানেলটিও নতুন প্রথমদিকে তো কখনওই ভিডিওতে হাজার হাজার ভিউস হবেনা। এই অবস্থায় যদি আপনি সেই ভিডিওতে মনেটাইজ অন করে রাখেন তখন ভিউসের থেকে ইম্প্রেশন বেশি হওয়ার ফলে আপনার মনেটাইজ ডিজেবল হয়ে যাবে।
এখন এর সমাধান কি?  এটি থেকে বাঁচতে আপনাকে অনেকেই অনেক কথা বলবে, কেউ বলবে সম্পূর্ণ ভিডিওতে অ্যাডস অন রাখুন, কেউ বলবে সব ভিডিওর অ্যাডস অফ করে রাখুন ইত্যাদি। তবে এর বেস্ট সমাধান হচ্ছে আপনি যে যে ভিডিওগুলোতে বেশি ভিউস হচ্ছেনা মনে করবেন সেই সেই ভিডিওগুলোতে অ্যাডস অফ করে রাখুন। আর যেগুলোতে ভালো ভিউস হচ্ছে সেই ভিডিওগুলোতে অ্যাডস অন রাখুন। আপনি যখন দেখবেন মনেটাইজ অফ রাখা ভিডিওগুলোতে ভালো ভিউস হচ্ছে তখন আবার মনেটাইজ অন করে দিবেন। এভাবে প্রথমদিকে একটু কষ্ট করুন তাহলে আশা করি কোন সমস্যা হবেনা।
* ইভ্যালিড এক্টিভিটিঃ-
এটি অনেক বড় একটি বিষয়, এর অনেকগুলো কারণ হতে পারে। আপনি যদি নিজের ভিডিও বারবার নিজেই ক্লিক করেন কিংবা আপনার কোন ফ্রেন্ড যদি বারবার আপনার একই ভিডিও দেখে এবং এডসে ক্লিক করে তাহলে আপনার মনেটাইজ ডিজেবল হয়ে যাবে।
নিজের মোবাইল দিয়ে নিজের ভিডিও দেখবেননা এবং কাউকে কখনওই বার বার দেখতে বলবেননা এতে করে নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মারবেন।
* আপনার CTR বেড়ে গেলেঃ-
CTR বেড়ে গেলে গুগল আপনার এডসেন্স একাউন্ট ডিজেবল করে দিবে। এখন অনেকেই CRT কি এটাই বোঝেনা, ধরুন আপনার এডসগুলি শো/ইম্প্রেশন হয়েছে ১০০বার এবং মানুষ তাতে ক্লিক করেছে ৫বার তাহলে আপনার CTR হবে ৫%.
এখন ১০০ভিউতে যদি অধিক পরিমানে ক্লিক পড়ে তাহলে এটি গুগল বন্ধ করে দিবে।
ইংলিশ কন্টেন্ট হলে ৫% এর উপর CRT নিয়ে যাবেননা এবং বাংলা কন্টেন্ট এ সাধারণত ১৫% এর উপর নিয়ে যাবেননা। যখনই দেখবেন এর বেশি হয়ে যাচ্ছে তখন আপনার যে যে ভিডিওতে ভিউস বেশি হচ্ছেনা কিন্তু এডস ৩-৪ টা করে দেয়া আছে সেগুলোতে অ্যাডস অফ করে রাখুন। কিংবা ভিডিওতে স্কিপঅ্যাবল এডসগুলো অফ করে রাখুন। এরপরও যদি দেখেন CTR বেড়ে যাচ্ছে তাহলে সব এডস বন্ধ করে দিয়ে গুগলকে মেইল করে সমস্যাটি জানাতে পারেন। তাহলে আশা করি আপনার  ডিজেবল হওয়ার সম্ভাবনা থাকবেনা।

পরবর্তী পার্ট

More Item

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন