-->

হ্যাকিং থেকে সুরক্ষিত থাকার উপায়। কোলাবরেশন কি? স্পন্সর কি এবং কিভাবে পাবেন।



হ্যাকিং থেকে কিভাবে মুক্ত থাকবেন। 


অনেক কষ্ট করে একটি চ্যানেল গড়ে তুললেন কিন্তু তা যদি আপনি রক্ষা করতে না পারেন তাহলে আপনার মতো দুর্ভাগা আর কেউ হবেনা। কারণ একটি চ্যানেল গড়তে যে কত কষ্ট সহ্য করতে হয়, তা যে গড়ে সেই বোঝে। তাই এই পার্টে আমি জানবো কিভাবে আপনি হ্যাকিং থেকে সুরক্ষিত থাকবেন।
চ্যানেল হ্যাক করার প্রধান মাধ্যম হচ্ছে আপনার মেইল হ্যাক করা, তাই আপনার মেইল সবসময় সিকিউর রাখবেন কিভাবে সিকিউর রাখবেন তা বিস্তারিত আলোচনা করছিঃ-
* আপনার ইউটিউব চ্যানেলের জন্য কমপক্ষে ২টি মেইল রাখবেন। একটিতে আপনার সাথে সকল বিষয়ে কন্টাক্ট করার জন্য আর অপরটি আপনার চ্যানেলের মেইল। কখনওই চ্যানেলের মেইন মেইল কোথাও শো করবেননা।
* দুইটি মেইলের পাসওয়ার্ডই স্ট্রং রাখবেন, তবে কখনওই ২টির সেম পাসওয়ার্ড রাখবেননা।
* ২টি মেইলেই টু-স্টেপ ভেরিফাই অন করে রাখবেন। এতে করে পাসওয়ার্ড জানার পরও আপনার মোবাইলে একটি কোড যাবে সেটি ছাড়া সাধারণত লগইন হবেনা।
* আপনি মেইলে আসা কোন লিংকে অযথা ক্লিক করবেননা, নাহলে আপনার ফোনের যাবতিয় তথ্য হ্যাক হয়ে যেতে পারে।
* বেশিরভাগ হ্যাকিং হয় স্পন্সরের মাধ্যমে। হ্যাকাররা বিভিন্ন ম্যালওয়ার তৈরি করে আপনাকে লিংক দিয়ে বলবে যে এই লিংকে ক্লিক করে আমাদের এপসটি ইনস্টল করে দেখুন এবং এটি রিভিউ করুন। আপনি যখনই সেটিতে ক্লিক করে ওপেন করতে ধরবেন, তখনই আপনার  মেইল পাসওয়ার্ড সহ ডিভাইসের সকল ইনফো তারা হ্যাক করে নিবে।
* এটি থেকে বাঁচতে আপনি ২টি ফোন ইউজ করলে ভালো হয়। একটিতে স্পন্সর, কন্টাক্ট কিংবা যেকোন লিংকে ক্লিক করার মেইলটি লগইন থাকবে আর অন্যটিতে আপনার চ্যানেলের মেইন মেইলটি থাকবে।
* অথবা আপনি চাইলে আপনার চ্যানেলটি ব্রান্ড একাউন্টে ট্রান্সফার করে অন্য একটি মেইলকে ম্যানেজার/ওনার হিসেবে এড করতে পারেন এবং প্রাইমারি ওনার মেইলটি ফোন থেকে ডিসকানেকটেড করে দিবেন। এরপর ম্যানেজার/ওনার মেইলটি দিয়ে ভিডিও আপলোড, ভিডিও এডিট সবকিছুই করতে পারবেন। আপনার একটি ফোন হলে এবং ফোনের সবকিছু হ্যাক হয়ে গেলেও চ্যানেলের এক্সেস সে নিতে পারবেনা। কারণ আপনার মেইন মেইল ফোনে কানেক্টেডই থাকবেনা এবং অন্যমেইলগুলোকে প্রাইমারি ওনার করতেও কিছুদিন সময় লাগবে আর আপনি এর মধ্যে চ্যানেল রিকোভার করে নিতে পারবেন।    
কিভাবে ব্রান্ড একাউন্ট খুলবেন, তা আমার চ্যানেল IT RafiuL AhsaN এ আপলোড করেছি সেখান থেকে দেখে নিতে পারেন।
আশা করি এই নিয়মগুলি মেনে চললে কেউ আপনার চ্যানেল হ্যাক করতে পারবেনা।


কোলাবরেশন কি, করলে কি হয়?


ইউটিউবে কোলাবরেশন হচ্ছে আপনি কাউকে সাহায্য করবেন এবং সে আপনাকে সাহায্য করবে। এর ফলে আপনার সাবস্ক্রাইবারগুলো তার চ্যানেল ভালে লাগলে সাবস্ক্রাইব করবে এবং তার সাবস্ক্রাইবার আপনার চ্যানেল ভালো লাগলে সাবস্ক্রাইব করবে।

তবে এর কিছু নিয়মকানুন রয়েছে। তা নিম্নে আলোচনা করা হলোঃ-
* সেম সাবস্ক্রাইবারের চ্যানেল হতে হবে। ধরুন আপনার সাবস্ক্রাইবার ১০০ এবং আপনি যদি চান ৫হাজার সাবস্ক্রাইবারের চ্যানেলের সাথে কোলাবরেশন করবেন, তাহলে সে তো কখনওই রাজি হবেনা। তাই সমান সংখ্যক সাবস্ক্রাইবারের চ্যানেল হলে ভালো হয়।
* সেম ক্যাটেগরির চ্যানেল হতে হবে।
ধরুন, আপনি ফানি ভিডিও করেন এবং আপনি টেক চ্যানেলের সাথে কোলাবরেশন করবেন। তাহলে তো টেক চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবারের কাছে ফানি ভিডিও ভালো নাও লাগতে পারে কিংবা ফানি সাবস্ক্রাইবারের কাছে টেক চ্যানেল ভালো নাও লাগতে পারে। তাই সেম ক্যাটেগরির চ্যানেল হলে দু'জনই ভালো উপকৃত হতে পারেন।
এখন বলি কোলাবরেশন করবেন কি কি উপায়ে?
* আপনারা চাইলে ২জন মিলে একটি ভিডিও তৈরি করতে পারেন এবং তা ২জনের চ্যানেলে আপলোড দিয়ে সাবস্ক্রাইব করতে বলবেন।
* কিংবা আপনি আপনার কোন ভিডিওতে তার চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে বলবেন এবং সে তার কোন ভিডিওতে আপনার চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে বলবে।
* অথবা আপনার কমিউনিটি ট্যাবে তার একটি ভিডিও শেয়ার করবেন এবং সে তার কমিউনিটি ট্যাবে আপনার কোন ভিডিও শেয়ার করবে।
এভাবে আপনারা অন্যের সাথে কোলাবরেশন করতে পারেন।


স্পন্সর কি? কিভাবে স্পন্সর পাবেন?


স্পন্সর হচ্ছে ইউটিউব থেকে ইনকামের অন্যতম একটি মাধ্যম। আপনারা হয়তো জানেন বড় ইউটিউবাররা মিলিয়ন টাকা ইনকাম করছে তার অন্যতম মাধ্যম স্পন্সরশীপ। মনেটাইজের টাকায় খুব বেশি ইনকাম আসেনা, তাই বেশি ইনকামের চিন্তা থাকলে অবশ্যই আপনাকে স্পন্সরশীপের পথটি বেছে নিতে হবে।
স্পন্সর হচ্ছে কোন কোম্পানি কিংবা কেউ তার প্রডাক্ট কিংবা কেন সার্ভিস আপনার ভিডিওর মাধ্যমে রিভিউ কিংবা প্রোমোট করে নেয়া।
এই রিভিউ বা প্রোমোট করে দিলে এর বিনিময়ে তারা আপনাকে কিছু পেমেন্ট করবে এটাই মুলত স্পন্সরশীপ।
তাদের অ্যাপস কিংবা কোন প্রডাক্ট/সার্ভিস সম্পর্কে আপনার ভিডিওর কোন এক অংশে বলে দিতে হবে।
এখন এই স্পন্সরশীপ প্রথমদিকে আপনাকেই একটু খুঁজতে হবে। আপনার ক্যাটেগরি রিলেটেড কোন সাইট কিংবা কোন কোম্পানির সাথে আপনি কন্টাক্ট করে স্পন্সরের ব্যাপারে জানাতে পারেন।  কিংবা অনলাইনেও বিভিন্ন প্লাটফর্ম থেকেও আপনি স্পন্সর পেতে পারেন। আপনি https://famebit.com এখানে একাউন্ট করেও এখান থেকে স্পন্সর পেতে পারেন।
কিন্তু চ্যানেল বড় হলে অটোমেটিক মানুষ আপনাকে মেইল করে স্পন্সরশীপের ব্যাপারে বলবে।
স্পন্সর নেয়ার পূর্বে কিছু বিষয় সম্পর্কে ধারণা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণঃ-
* স্পন্সর নেয়ার আগে সেই কোম্পানি সম্পর্কে গুগল থেকে সার্চ করে ভালোভাবে ইনফরমেশন নিয়ে তারপর ভালো মনে হলে স্পন্সর গ্রহণ করবেন।
* কখনওই আপনার ভিউয়ার্সকে ২ পয়সার জন্য ধোঁকা দিবেননা। কারণ এই ২ পয়সার জন্য আপনার পরবর্তী ইনকামে একদম তালা পড়ে যাবে। তাই সবসময় সঠিক বিষয়ে স্পন্সর করুন।
* স্পন্সরের ক্ষেত্রে সার্ভিস অনুযায়ী চার্জ গ্রহণ করবেন বেশিও না আবার কমও না। আপনার চ্যানেলের ভিডিওতে যদি ৫-৭হাজার করে ভিউস হয়, তাহলে আপনি প্রতি স্পন্সরে ৩০-৪০$ চার্জ গ্রহণ করতে পারেন। যদি ১০-১২ হাজার ভিউস হয় তাহলে ৬০-৮০$ এভাবে সার্ভিস অনুযায়ী কম বা বেশিও নিতে পারেন।
* স্পন্সরের মাধ্যমে চ্যানেল হ্যাক হওয়ার সম্ভাবনা প্রচুর। তাই আপনার অন্য মেইল/ফোন দিয়ে তাদের লিংক কিংবা কোন সার্ভিস প্রথমে রিভিউ করে দেখতে পারেন।
* যদি দেখতে পারেন তারা আপনাকে অধিক পরিমানে স্পন্সরের চার্জ দিতে চাচ্ছে তাহলে বুঝবেন এর মধ্যে আপনার চ্যানেল হ্যাকিং এর কোন না কোন যোগসূত্র থাকতে পারে। তাই একটু সাবধানে স্পন্সরশীপ গ্রহণ করবেন, লোভে পড়ে কখনওই তাদের ফাঁদে পা দিবেননা।
আশা করি স্পন্সরশীপ সম্পর্কে আপনার কিছুটা হলেও ধারণা হয়েছে।

পরবর্তী পার্ট

More Item

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন